ইরাক যুদ্ধে আল-কায়েদার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা ভিডিও ছড়াতে আমেরিকার খরচ ৫ হাজার কোটি টাকা
পেন্টাগন এই ভিডিও তৈরি এবং প্রচারে ব্যবহার করে একটি ব্রিটিশ বেসরকারি সংস্থাকে।
ইউকে-ভিত্তিক একটি পাবলিক রিলেশোন ফার্মের একজন সাবেক কর্মকর্তা জানান যে, তাদের সাথে মাঋক সংস্থা পেন্টাগন ৫ হাজার কোটি টাকার একি চুক্তি করে। সে চুক্তিমত সেই প্রতিষ্ঠানকে আল-কায়েদের বিরুদ্ধে ভুয়া ভিডিও তৈরি করে তা ছড়িয়ে দিতে হবে।
দ্য ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টস তাদের তদন্তে জানিয়েছে যে, বেল পটিংগার নামে সেই পি-আর প্রতিষ্ঠানটি ইরাক যুদ্ধে বাগদাদের ক্যাম্প ভিক্টরিতে মার্কিন সেনাদের সাথে কাজও করেছে। উক্ত এজেন্সির কাজ মূলত ছিল, আরব বিশ্বের সংবাদমাধ্যমগুলোর মত বিশ্বাসযোগ্য ভিডিও তৈরি করতে হবে যেখানে আলকায়েদার জঙ্গিরা বোমা মারছে আর মার্কিন সেনারা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। শুধু তাই নয়, সেসব ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার পর সেসব ভিডিওয়ের দর্শকদের অবস্থান কোন কোন দেশে আছে, তাও জানানো কাজ ছিল সেই প্রতিষ্ঠানটির।
এসব তথ্য অবশ্য আরো ১০ বছর আগেই জানা গেছিল যখন ওয়াশিংটন-ভিত্তিক আরেকটি পি-আর ফার্ম লিংকন গ্রুপের কর্মকান্ড ফাস হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি মূলত আমেরিকা মিশনের হয়ে ইরাকের নানা পত্রিকায় বিরাট মূল্যের অর্থ দিয়ে আমেরিকার পক্ষে ইতিবাচক খবর-মতামত ছাপানো হত। ততকালীন সময়ে আমেরিকার এক পত্রিকা লস এঞ্জেল টাইমসে তার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ পায়।
ইউকে ভিত্তিক বেল পটিংগারকে প্রথম কাজে লাগানো হয় ইরাকের অন্তবর্তী সরকারের সময়ে, ২০০৪ সালে, গণতন্ত্রের পক্ষে প্রচার চালানোর জন্যে। তারপর ২০০৭ সালের মে থে ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত তাদের দেওয়া হয় প্রায় সাড়ে ৫ শ মিলিয়ন ডলার। যদিও তাদের পাওয়ার কথা ছিল সর্বোচ্চ হলে ১২০ মিলিয়ন ডলার।
লর্ড টিম বেল, উক্ত কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান আমেরিকার আরেক পত্রিকার সাথে এই চুক্তি স্বীকার করেন। পেন্টাগন থেকেও জানানো হয় যে তারা বিশেষ এক মিশনের ক্ষেত্রে উক্ত কোম্পানিকে কাজ দিলেও সেসব ভিডিও সবই ছিল “সত্য”।
যদিও সেখানকার সাবেক এক ভিডিও এডীটর মার্টিন ওয়েলস জানান যে তিনি বেল পটিংগারে কাজ করাকালে পেন্টাগন থেকে তাকে নানা ভিডিও বানাতে দিত যা ছিল আল-কায়েদার বিরুদ্ধে বানানো ভুয়া প্রপাগান্ডা ভিডিও।
তিনি আরো জানান, এসব ভিডিও মূলত সিডিতে করে মার্কিন নেভির লোকজন কোন সন্ত্রাসী-অধ্যুষিত এলাকায় রেইড দেওয়ার পূর্বে ফেলে আসতেন।